নির্দিষ্ট ৮ ঘন্টা কর্ম দিবসের চেয়ে বর্ধিত সময়কে মাইলেজ হিসেবে যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক প্রদানের দাবীতে এবং দাবি না মানলে কর্ম বিরতির হুশিয়ারী দিয়ে ঈশ্বরদীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে রেলওয়ে রানিং স্টাফ কর্মচারিরা।
সোমবার (২০ জানুয়ারী) দুপুর সাড়ে ১২ টায় দেশের বৃহত্তর রেলওয়ে জংশন স্টেশন ঈশ্বরদীতে তারা এই কর্মসূচী পালন করে।
এর আগে গত সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে একই দাবীতে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের বিভাগীয় কার্যালয় প্রাঙ্গনে ( পাকশী আমতলায়) একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। মিছিল শেষে ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) চত্বরে এসে সমাবেশ করেন এবং ডিআরএম এর মাধ্যমে রেল মন্ত্রনালয় বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) গৌতম কুমার কুন্ডু।
বিক্ষুব্ধ রেলওয়ের ট্রেন চালক, গার্ড ও টিটিইরা ঈশ্বরদী স্টেশনে সমাবেশে রানিং স্টাফ কর্মচারিরা আগামী ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে আল্টিমেটাম দেন। দাবি মেনে না নেয়া হলে ২৮ জানুয়ারি সকাল থেকে কর্মবিরতি শুরু হবে বলে ঘোষণা দেন। এতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে আওতায় সকল ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেবেন বলেও তারা ঘোষনা দেন। এসময় তারা ট্রেনের চাঁকা ঘুরবে না, রেলগাড়ি আর চলবে না সহ নানা স্লোগান দিয়ে প্লাটফর্মে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
সমাবেশে রেলওয়ে রানিং স্টাফ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, রেলওয়ে গার্ডস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন, রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদের পাকশী বিভাগের আহবায়ক রবিউল ইসলাম, রেলওয়ে শ্রমিক কর্মচারী দল ঈশ্বরদী শাখার সভাপতি মাসুদ রানা নয়ন, ঈশ্বরদী উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক ছবি মণ্ডল, টিটিইজ এ্যাসোসিয়েশন ঈশ্বরদী শাখার সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হক, টিটিই আব্দুল আলিম মিঠু প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, রেলওয়ে রানিং স্টাফদের পার্ট অব পে–মাইলেজ যোগে পেনশন ও আনুতোষিক প্রদানে ০৩/১১/২০২১ হতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সকল অসম্মতি প্রত্যাহার এবং নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত রানিং স্টাফদের নিয়োগপত্রের বৈষম্যমূলক ১২ এবং ১৩ নং শর্ত বাতিল করে রেলওয়ে কোড ও বিধি বিধানের আলোকে আদেশ জারীর দাবী জানান।
পাকশী বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) গৌতম কুমার কুণ্ডু জানান, রানিং স্টাফ কর্মচারীরা বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) বরাবর তাদের দাবী সম্বলিত একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন। আমি সেটা গ্রহন করেছি। আমরা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো। আশা করি রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা একটা সমাধানের পথ বের করার চেষ্টা করবেন।
উল্লেখ্য, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের আওতায় ১০৮ টি ট্রেন চলাচল করে। তার মধ্যে আন্তঃনগর ৫৪ টি, মেইল ৩৫ টি, লোকাল ১৯ টি এবং মালবাহী ট্রেন চলাচল করে। ২৮ তারিখ হতে কর্মবিরতি শুরু হলে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের আওতায় সকল ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। এতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ব্যাপক শিডিউল বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে।