সামান্য বৃষ্টির পানিতেই টইটুম্বুর হয়ে যায় ঢুলটি বাজারের একাংশ, তলিয়ে যায় মাছ বাজার এবং তৎসংলগ্ন সংযোগ সড়ক এবং ঈশ্বরদী-ঢাকা মহাসড়কের প্রায় ৩০০ মিটার। বৃষ্টিজনিত জলাবদ্ধতার কারনে সংযোগ সড়কটি ভেঙে ছোট বড় শতাধিক গর্ত তৈরী হলেও এখন অক্ষত রয়েছে মহাসড়ক। তবে জলাবদ্ধ অবস্থায় কতদিন অক্ষত থাকবে মহাসড়ক সেই প্রশ্ন এখন জনমনে। অথচ এই জলাবদ্ধতা নিরসনে বিগত আওয়ামীলীগ সরকার প্রায় ৩৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ২৯০ মিটার পানি নিষ্কাশনের ড্রেন এবং বাজারের ব্যবসায়ীদের জন্য একটি স্বস্থ্যসম্মত গণশৌচাগার তৈরী করেছে। কিন্তু উপজেলা প্রকৌশলী এবং সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খালেক মালিথার খাকখেয়ালি আর অব্যাবস্থাপনায় কোন কাজেই আসছে না সরকারের এই প্রকল্প।
সরেজমিন দেখে এবং স্থানীয়দের মারফত জানাযায়, পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নের ঢুলটি বাজারে দুইটি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার অর্থায়নে বাজারের ব্যবসায়ীদের ব্যবহারের জন্য একটি শৌচাগার এবং অত্র বাজারে আটকে থাকা বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি ড্রেন। ২০২০/২০২১ অর্থবছরের অর্থায়নে এ কাজ দুটোর নির্মান কাজ শেষ হলেও সেগুলো এখনো ব্যবহার অনুপোযোগীই রয়ে গেছে। কেননা পানি নিষ্কাশনের জন্য তৈরী ড্রেনটি নির্মিত হয়েছে জলাবদ্ধতা থেকে প্রায় ১০০ মিটার দুরে এবং উঁচু স্থান দিয়ে। আর শৌচাগারটি নির্মিত হয়েছে জলাবদ্ধতার মাঝে। যার চারপাশে পানি জমে আছে প্রায় কোমর অবধি।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপজেলা পরিচালন ও উন্নয়ন প্রকল্প (ইউজিডিপি) জাইকার আওতায় ২০২০/২০২১ অর্থবছরে ঈশ্বরদী উপজেলাধীন মুলাডুলি ইউনিয়নের ঢুলটি হাটে এ ওয়াশ ব্লক নির্মান কাজের বাস্তবায়ন ব্যয় ধরা হয়েছিলো ১৩,৯০,১৯৪ টাকা এবং ২০০ মিটার ড্রেনটির নির্মান ব্যয় ধরা হয়েছিলো প্রায় ১১ লক্ষ টাকা। যেটা বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার অর্থায়নে ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদ বাস্তবায়ন করেন। এর সাথে পরবর্তীতে আরও ৯০ মিটার ড্রেন বর্ধিত করা হয় যার নির্মান ব্যয় ধরা হয়েছিলো প্রায় ১১ লক্ষ টাকা।
স্থানীয় মো. আজাদ হোসেন জানান, সরকারী জায়গা অবৈধ দখল করে সেখানে নির্মান করা হয়েছে মার্কেট। যার ফলে এই বাজারে জলাবদ্ধতার তৈরী হয়েছে। শুধু তাইনয়, স্থানীয় দখলদারদের সুবিধা দিতে উপজেলা প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্টরা জলাবদ্ধতা থেকে প্রায় ১০০ মিটার দুরে নির্মান করেছে পানি নিষ্কাশনের ড্রেন, যেটাতে সরকারের কয়েক লক্ষ টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে।
ঈশ্বরদী উপজেলা প্রকৌশলী মো. এনামুল কবির জানান, স্থানীয় প্রতিনিধিদের দেখানো জায়গা দিয়ে ড্রেন নির্মান করা হয়েছে। তবে ড্রেনের আরেকটু কাজ বাকি আছে । সেটা এবারের বাজেটে সেরে ফেলা হবে। আর জলাবদ্ধতায় সংযোগ সড়ক এবং মহাসড়কের যে ক্ষতি হয়েছে সেগুলো রিপেয়ার করে দেওয়া হবে। বাজারে নির্মিত শৌচাগারটির নির্মান কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু সেটা কেন ব্যবহার করা যাচ্ছে না সেটা দেখে দ্রুতই সেই সমস্যার সমাধান করা হবে।
তবে পর্যাপ্ত সরকারী জায়গা থাকা সত্ত্বেও জলাবদ্ধতা থেকে নির্মিত ড্রেনটি প্রায় ১০০ মিটার দুরে এবং প্রায় ৮ ফুট উচু স্থান দিয়ে কেন নির্মান করা হয়েছে জানতে চাইলে প্রকৌশলী প্রসঙ্গটি এড়িয়ে যান।
ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবীর কুমার দাশ বলেন, আমি ঢুলটি বাজারের জলাবদ্ধতা দেখেছি। খুব দ্রুতই এই সমস্যার সমাধান করা হবে।