1. shangbadvumi@gmail.com : Shangbad vumi :
মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ১০:১৮ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
ঈশ্বরদীতে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন সম্পত্তি থেকে অবৈধভাবে জোর পূর্বক বালি উত্তোলনের অভিযোগ ঈশ্বরদীতে চাঁদার টাকা না পেয়ে বালি ব্যবসায়ীদের গাড়ি ভাংচুর ও মারধর আড়ামবাড়িয়ার অশান্ত পদ্মারচরে ৮ কৃষককে পিটিয়ে জখম-দুই গরু জবাই করে পিকনিক পুলিশের উপর জনগণের আস্থা ফেরাতে সর্বদা কাজ করেছি- খোলা চিঠিতে ওসি শহীদুল রাজশাহী রেঞ্জের শ্রেষ্ঠ সাবইন্সপেক্টর নির্বাচিত ঈশ্বরদীর শরিফুজ্জামান ‘প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ’ খালেদা জিয়া দেশে ফেরায় ঈশ্বরদীতে বিএনপির আনন্দ মিছিল ঈশ্বরদীতে আইন সহায়তা ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঈশ্বরদী শাখার মে দিবস উৎযাপন ঈশ্বরদীতে পরিষদে অবরুদ্ধের পর ৩ ইউপি সদস্যকে পুলিশে সোপর্দ

ঐতিহ্য বেচে আর সংসার চলেনা

খালেদ মাহমুদ সুজন, সম্পাদক সংবাদ ভূমি
  • আপডেট সময় : শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪
মৃৎশিল্প

বাঙ্গালীর ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে মৃৎশিল্প। একটা সময় এই শিল্পের উপর নির্ভর করেই আবহমান গ্রাম বাংলায় গড়ে উঠত একেকটি কুমোড় পাড়া। নরম কাঁদা মাটিকে হাতের স্পর্শে মনোরম, দৃষ্টিনন্দন এবং ব্যবহার উপযোগী করে গড়ে তোলা কুমোড় পাড়ার প্রতিটি নর-নাড়ীর হাতেই রয়েছে যাদুর ছোঁয়া। যে যাদুতে একেকটি কাঁদামাটির খন্ড দৃষ্টি নন্দন নানা আসবাবপত্রসহ স্থান বাহারী বাসনের স্থান করে নিত প্রায় প্রতিটি বাঙ্গালির ঘরে। কিন্তু প্রযুক্তির উন্নয়ন আর মানুষের জীবন যাপনে চাহিদার পরিবর্তনের সাথে সাথে এখন এসব ঐতিহ্য বিলুপ্তির দ্বার প্রান্তে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে মৃৎশিল্পের বর্তমান চাহিদা অতি নগন্য। বর্তমানে মৃৎশিল্পের সাথে জড়িত পরিবারের সদস্যদের দু-বেলা ডাল-ভাত জোগাড় করাই যেন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। তাই তারা গ্রামবাংলার এই ঐতিহ্য ছেড়ে এখন পেশা বদলানোর চেষ্টায় প্রতিনিয়িত অতিবাহিত করছে অনেকেই। কেননা ঐতিহ্য বেঁচে এখন আর সংসার চালানো যায়না বলেই তারা ধরে নিয়েছেন।

ঈশ্বরদী উপজেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় মাটির তৈরী বিভিন্ন বাসনের এখনো ভালো চাহিদা রয়েছে। এ অঞ্চলের মানুষের চাহিদা মেটানোর জন্যই আমরা বছরের ৫ (পাঁচ) মাস নওগাঁ থেকে ঈশ্বরদীতে মেইল ট্রেন যোগে মাটির তৈরী জিনিসপত্র এনে এঅঞ্চলে বিক্রি করি। তবে মাটি সংগ্রহ থেকে শুরু করে রোদে শুকিয়ে আগুনে পোড়াতে যত শ্রমিকের প্রয়োজন হয় বিক্রি করে সেই খরচ তুলতেই হিমশিম খাচ্ছি আমরা।

মৃৎশিল্পের সাথে অতঃর্পূত ভাবে জরিয়ে থাকা এবং কেবল এই শিল্পের উপরই নির্ভর পরিবারের কর্তা মো: মোবারক হোসেন (৫৭) মৃৎশিল্পের ভবিষৎ শঙ্কা নিয়ে এভাবেই তার দীর্ঘ অভিজ্ঞতার কথা বলছিলেন এই প্রতিবেদকের সাথে। মৃৎশিল্পের কারিগর এবং বিক্রেতা মোবারক হোসেন নওগাঁ জেলার আত্রাই থানাধীন মির্জাপুর গ্রামের বাসিন্দা। ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশন প্লাটফর্মে দিনের কর্মব্যস্ততা শেষে সন্ধ্যায় পরের দিনের প্রস্তুতির সময় আলাপ কালে  এভাবেই মৃৎশিল্পের অন্ধকার ভবিষৎ নিয়ে তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন মোবারক হোসেন।

তিনি বলেন, মাটির টেকসই তৈজসপত্র তৈরী করতে এক ধরনের এঁটেল (লাল রংয়ের) মাটির প্রয়োজন হয়। যা সবখানে পাওয়া যায়না বলে অন্যত্র থেকে উচ্চ মূল্যে ক্রয় করতে হয়। যে মাটির প্রতি কেজির মূল্য ১০০ টাকা। পোড়ানো কাঁচা কাঠের দাম ২০০ টাকা মণ। স’মিলের গুড়াও (জ্বালানি) এখন দাম বেড়ে হয়েছে ৩০০ টাকা বস্তা। সব মিলিয়ে তৈরীর উপকরণের খরচাদির সাথে বিক্রির ব্যবধানটা কখনই আশানুরুপ হয়না। তবুও পূর্ব পুরুষ আর গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য বলে এগুলোকে এখনো পুরোপুরি ছাড়তে পারিনি। তবে এগুলোকে হয়তোবা আর বেশিদিন ধরে রাখতেও পারবনা বলেও দীর্ঘশ্বাস ছাড়েন তিনি।

বিক্রির বাহন সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, বাঁশের তৈরী ২টি বড় মাপের ঝাকার মধ্যে বড় থেকে ছোট সমন্বয়ে বিশেষ কায়দায় সাজানো হয় মাটির তৈরী পাত্র গুলোকে। তারপর ঝাঁকা গুলোকে একটি বাঁশের বাঁেকর দু-মাথাতে দুটোকে ঝুলিয়ে ( বাশের তৈরী বোঝা টানার বিশেষ জিনিস) সারাদিন (গাওয়াল) গ্রামে ঘুরে বিক্রি করি। ফুরিয়ে গেলে আবার এলাকা থেকে এনে সেগুলোকে সংরক্ষন করাহয় ঈশ্বরদী রেলওয়ে স্টেশন প্লাট ফর্মের একটি শেডের নিচে। সেখান থেকেই প্রত্যহ দিন শুরু হয়। আবার দিন শেষেও সেখানেই ফিরে খোলা মাঠেই রাত্রি যাপন করি। দিনের খাবার খাই গ্রামের বিভিন্ন টং দোকানে। ভাতের সাথে দেখা হয় দিনে ১ বার। এত কষ্ট করেও যদি পরিবার পরিজনের মুখে ভালোমত দুমোঠো ভাত তুলে দিতে পারতাম তাহলে সব কষ্ট ভুলে থাকতে পারতাম। কিন্তু কি আর করা অন্য কাজতো শিখিনি। আবার গ্রামবাংলার ঐতিহ্য বেচে এখন আর সংসারও চলে না।

আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২২ সংবাদ ভূমি
Theme Customized BY LatestNews