উফসী ফসলের ফলনের তুলনায় হাইব্রীড ধানের ফলন বেশী হওয়ায় কৃষক পর‌্যায়ে চাহিদা বাড়ছে হাইব্রীড ধানের। সেই বাড়তি চাহিদা পূরণে এবার ঈশ্বরদী জুড়ে বেড়েছে হাইব্রীড বীজ ধান চাষের পরিধি।

ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি অফিসের সূত্র মতে, এ বছর পুরো উপজেলায় বোরো ধানের চাষ হচ্ছে মোট ২৬১৫ হেক্টর জমিতে। যার মধ্যে ১৬৫৭ (এক হাজার ছয়শত সাতান্ন) একর জমিতে চাষকরা হচ্ছে উচ্চ ফলনশীল হাইব্রীড বীজ উৎপাদন কারী ধান। এর মধ্যে এসিআই ৪৩২ একর, বিআরআই ৮০, ব্র্যাক ৩৫০, সিনজেনটা ১৪০, বেবীলন ২৫০, স্প্যানিশ ৩৫৫ এবং লাল তীর ৫০ একর জমিতে চাষ করছে হাইব্রীড বীজ উৎপাদন কারী এ ধান। তবে স্থানীয়রা এ ধানকে নারী পুরুষ ধান নামেই আখ্যা দিয়েছেন।

ঈশ্বরদী উপজেলায় ধান চাষের সবচে বড় মাঠ অরণকোলা এবং বাঘহাছলায় সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, এ মাঠের শতকরা ৭৫ শতাংশ জমিতে এবার প্রায় ৭ টি কোম্পানি তাদের বীজ উৎপাদনের জন্য হাইব্রীড জাতের ধান রোপন করেছেন। এ ধান রোপনের জন্য কোম্পানি গুলো তিন মাসের জন্য কৃষকেদের থেকে প্রতিবিঘা জমি বর্গা নিয়েছেন ১২৫০০/= (বারো হাজার পাঁচ শতটাকা) থেকে ১৩৫০০/= (তেরো হাজার পাঁচ শত টাকায়।

বাঘহাছলা মাঠের গভীর নলকূপের মালিক এবং কৃষক স্বপন বলেন, এবছর প্রকল্পের ধানের জন্য সাধারণ কৃষকের ধান মাঠে নেই বললেই চলে। এজন্য আমাদের সেচের কাজের তেমন আলাদা চাপ নেই। তবে মাঠে কৃষকদের ধান না থাকায় অনেককেই চাউল কিনে খেতে হবে।

কৃষক মো: হাসেন বলেন, শতকরা ১৫ জন কৃষকের মাঠে এবার ধান আছে বাকি সবই প্রকল্পের নারী আর পুরুষ ধানে ভরা। এবার এলাকারমানুষের ঘরের ধানে ভাত খাওয়া শেষ।

প্রকল্পের সিনজেনটার মো: শাকিল ইসলাম বলেন, আমরা উচ্চ ফলনের জন্য প্রতি বছরই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হাইব্রীড জাতের ধান চাষ করে থাকি । এবার ঈশ্বরদীতে করেছি। ধান বেশ ভালো হয়েছে। আবহাওয়া অনূকুলে থাকলে ভালো ফলনের সাথে সুস্থ্য বীজ আমরা সংগ্রহ করতে পারব। যা দেশে র চাহিদা মেটাতে ভূমিকা রাখবে।

ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা মিতারানী সরকার বলেন, দেশে প্রতিনিয়তই জনসংখ্যা বাড়লেও চাষযোগ্য জমির পরিমান বাড়ছে না। সেই কারনে বাড়তি জনসংখ্যার জন্য প্রয়োজন বাড়তি খাদ্যের। সেই বাড়তি চাহিদা মেটাতেই উফসি ফসলের চেয়ে হাইব্রীড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কেননা উফসির তুলনায় হাইব্রীডে ফলন বেশী দেয় বিঘা প্রতি প্রায় ১০ থেকে ১৫ মন। যদিও হাইব্রীড বীজের মাদার লাইন চীন কেন্দ্রিক। যদি কখনও চীন এই বীজের সাপ্লায় বন্ধকরে দেয় তাহলে বাংলাদেশের কৃষিকে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মূখিন হতে হবে।