কেন্দ্রিয় বিএনপির নির্দেশনা অমান্য করে পাবনার ঈশ্বরদীতে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগসহ বিভিন্ন সংযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রবেশ করছে বিএনপিতে। কেন্দ্রিয় নেতাদের নামে ব্যানার ঝুলিয়ে বিএনপির কর্মকান্ডসহ দলীয় কার্যালয় উদ্বোধন করার ঘটনায় রীতিমত বিস্ময় প্রকাশ করছেন বিএনপির স্থানীয় জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ।
গত বুধবার (১১ ডিসেম্বর) উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের বাঁশেরবাদায় ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির কার্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এমনই ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দরা অভিযোগ করে বলেন, পতিত সরকারের সময় বাঁশেরাবাদায় মো. জিয়াউর রহমান জিয়া নিজেকে আওয়ামী শ্রমিক অধিকার সংরক্ষণ ও বাস্তবায়ন পরিষদের শ্রম ও জনসংযোগ সম্পাদক ছিলেন। আওয়ামীলীগের বিভিন্ন কর্মকান্ড চালিয়েছেন। বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচিতে বাঁধা দিয়েছেন। ২০২২ সালে কেন্দ্রীয় আওয়ামলীগের সভাপতি মন্ডলির সদস্য শাহজাহান খান এমপি, পাবনা-৪ আসনের এমপি বীরমুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান বিশ^াস ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহসভাপতি মুরাদ আলীর ছবি দিয়ে ব্যানার বানিয়ে সমস্ত এলাকায় টানিয়েছিলেন। গত বুধবার বিকেলে সাহাপুর ইউনিয়ন বিএনপির ৯ নং ওয়ার্ড শাখার কার্যালয় উদ্বোধনী প্রধান অতিথি বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য পাবনা জেলা বিএনপির আহবায়ক হাবিবুর রহমান হাবিবের ব্যানারে সেই জিয়াকে আমরা বিএনপি পরিবার একতাদল ঈশ্বরদী উপজেলা শাখার জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি পরিচয়ে অতিথি করা হয়েছে।
এর আগে পতিত সরকারের পর ঈশ্বরদী শহরে যুবলীগের প্রভাবশালীকর্মী সোহেল রানা ওরফে নাটা সোহেল, নছিবসহ বেশ কিছু নেতাকর্মী ছাত্রদল নেতা রফিকুল ইসলাম নয়নের সঙ্গে যুক্ত হয়ে রাজনীতি করছেন। তারা বিএনপিতে প্রবেশ করেই আওয়ামীলীগ নেতাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছেন। এতে বিএনপির সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে বলে পৌর বিএনপির নেতৃবৃন্দ তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় আওয়ামীলীগের একাধিক নেতা দাবী করে বলেন, জিয়াউর রহমান জিয়া আওয়ামীলীগের রাজনীতি করতেন। সরকার পতনের পর স্থানীয় বিএনপি নেতা সান্টু মেম্বারের সঙ্গে এখন বিএনপি নেতা হয়েছেন।
এ ব্যাপারে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতি ও সাহাপুর ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. সানোয়ার হোসেন সান্টু মেম্বার বলেন, অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হাবিবুর রহমান হাবিব না আসায় মন খুবই খারাপ। আওয়ামীলীগ নেতা জিয়াউর রহমান জিয়া সম্পর্কে সান্টু মেম্বার বলেন, জিয়াউর রহমান জিয়ার ট্রাক ছিলো। এই কারণে আওয়ামী এমপি, মন্ত্রীদের পাবনায় আগমনে ২০২২ সালে ব্যানার টানিয়ে ছিলেন। এখন বিএনপি করে। এরবেশি কিছু জানিনা।
পাবনা জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম নয়ন বলেন, আমি উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। অনেককেউ আমি চিনি না। আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর সেই দলের কেউ বিএনপিতে প্রবেশ করে তা অতি দুঃখ ও লজ্জার ব্যাপার।
আওয়ামীলীগে থাকা কালীন ছবি
উপজেলা যুবদলের আহবায়ক রকিবুল ইসলাম রকি বলেন, অনুষ্ঠানে জিয়া নামে বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। কোন জিয়া তা বুঝতে পারছি না। তবে পতিত সরকারের কেউ এখন বিএনপির কর্মকান্ডে ভূমিকা রাখবে তা খুবই দুঃখজনক।
এই ব্যাপারে আওয়ামীলীগ থেকে বিএনপিতে অনুপ্রবেশকারী জিয়াউর রহমান জিয়ার বক্তব্য জানতে বারবার তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।